বশেমুরবিপ্রবি
তিন চিকিৎসক দিয়ে চলছে ১২ হাজার শিক্ষার্থীর চিকিৎসাসেবা

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২২ | ০৫:৩৭ | আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২২ | ০৫:৩৭
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) ১২ হাজার শিক্ষার্থীকে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন মাত্র ৩ জন চিকিৎসক। এতে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। আর চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরা। অতিরিক্ত টাকা দিয়ে বাইরে থেকে চিকিৎসক দেখিয়ে সেবা নিতে হচ্ছে তাদের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়েরে ৩৪টি বিভাগে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২হাজার। কিন্তু তাদেরকে চিকিৎসা সেবা প্রদানে ৩ জন চিকিৎসক নিয়োজিত রয়েছেন। নার্স মাত্র ২জন। এই ৫ জন লোকবল দিয়ে চিকিৎসা সেবা কোন রকমে সচল রাখা হয়েছে।
লোক প্রশাসন বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী শারমিন আক্তার সম্পা বলেন, আমরা নিয়মিত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছিনা। মাঝে মাঝে ডাক্তার থাকলে নার্স থাকে না। আবার কখনও নার্স থাকলে ডাক্তার থাকে না। এতে করে আমরা সেবা পাচ্ছি না। ডাক্তারদের চিকিৎসা কেন্দ্রে উপস্থিত থাকার সময় সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। কিন্তু নিয়মিত তারা অফিস করেন না। দুপুরের বিরতির পরে চিকিৎসকদের চিকিৎসা কেন্দ্রে দেখা যায় না। ফলে বেশিরভাগ সময় আমাদের বাইরের চেম্বারে গিয়ে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা ব্যয় করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হয়।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আকাশ মালো বলেন, গত দু'দিন ধরে আমি সাইনোসাইটিসের সমস্যায় ভুগছি। যেটি আমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে খুবই দুর্বল করে দিচ্ছে। চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করার জন্য গতকাল এবং আজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে এসেছি। কিন্তু ডাক্তার অনুপস্থিত ছিলেন। এই কারণে আমি চিকিৎসাসেবা পাইনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের অফিসার ডা. রোকাইয়া আলম বলেন, আন্তর্জাতিক নিয়মানুযায়ী ১ হাজার রোগীর জন্য ১ জন চিকিৎসক থাকবেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ১২হাজার। তাদের জন্য ১২জন চিকিৎসকের প্রয়োজন। দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সাথে তাল মিলিয়ে চিকিৎসক নিয়োগ করা আছে। কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসকের সংখ্যা মাত্র ৩ জন। এমনকি একটি চিকিৎসা কেন্দ্রে ফার্মাসিস্ট, আয়া, বয় থাকতে হয়। কিন্তু আমাদের এখানে ফার্মাসিস্টের কাজ নার্স বা ব্রাদারকে করতে হয়। ফলে তারা সঠিকভাবে সেবা প্রদান করতে পারেনা।
ডাক্তারদের অনুপস্থিতির কারন সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. লিখন চন্দ্র বালা বলেন, একজন ডাক্তার নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত রোগী দেখতে পারে। এর বেশি সময় ধরে রোগী দেখলে আমরা সঠিক চিকিৎসা প্রদান করতে পারিনা। ফলে রোগী নানাবিধ সমস্যায় পরে যাবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা ৩ জন ডাক্তার ১২হাজার শিক্ষার্থীর চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকি। যেটি আমাদের জন্য খুবই দুসাধ্য ব্যাপার ৷ তবে ইতিমধ্যে আমরা রেজিস্ট্রার বরাবর নতুন চিকিৎসক নিয়োগের জন্য লিখিতভাবে আবেদন করেছি। সেখানে নতুন করে ২জন পুরুষ ও ২জন মহিলা চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়ার জন্য বলেছি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমান বলেন, মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসকের ঘাটতির বিষয়টি আমরা জানি। মেডিকেল সেন্টার থেকে নতুন চিকিৎসক নিয়োগ প্রদানের জন্য আবেদন করা হয়েছে। আমরা আবেদন পেয়ে নতুন চিকিৎসক নিয়োগ করার জন্য ইউজিসি বরাবর মৌখিকভাবে জানিয়েছি। ইউজিসি নতুন করে চিকিৎসকদের পোস্ট সৃষ্টি করে পাঠালে আমরা চিকিৎসক নিয়োগ দেব।
- বিষয় :
- বশেমুরবিপ্রবি
- চিকিৎসাসেবা
- চিকিৎসক
- নার্স
- শিক্ষার্থী