প্রতিমন্ত্রীর ‘আশীর্বাদে’ বেপরোয়া সেই মনি ধরাছোঁয়ার বাইরে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ
প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ০০:১৪
মুক্তাগাছায় যুবলীগ কর্মী আসাদুজ্জামান আসাদ হত্যার প্রধান আসামি মাহাবুবুল আলম মনি ছিলেন ছাত্রদলের কর্মী। তিনি এখন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য। এর আগেও এলাকায় মানুষের ওপর অত্যাচার ও নানা অপকর্মের অভিযোগে মামলা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তবে বিভিন্ন ঘটনা আপস-মীমাংসা হয়েছে এবং কঠোর ব্যবস্থা কখনও নেওয়া হয়নি। আসাদ হত্যায় মামলা হলেও মনি ধরাছোঁয়ার বাইরে।
মাহাবুবুল আলম মনির বেপরোয়া হওয়ার পেছনে সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা। তাঁকে ছাড়া প্রতিমন্ত্রী পথ চলতে পারেন না– এমন দাবি বিরোধী পক্ষের। এর আগে চিকিৎসককে পিটিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন মনি।
মুক্তাগাছা উপজেলায় আওয়ামী লীগের রাজনীতি দুটি ধারায় বিভক্ত। একটি গ্রুপের নেতৃত্বে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল হাই আকন্দ। তাঁর সঙ্গে দলের তৃণমূল পর্যায়ের বড় একটি অংশ রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, অপর গ্রুপে নেতৃত্ব দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন সরকার এবং বিল্লালের জামাতা মাহাবুবুল আলম। মাহাবুবুল এলাকায় জামাই মনি হিসেবেই পরিচিত।
দু’পক্ষের দ্বন্দ্ব বহু আগে থেকেই চলে আসছে। গত পাঁচ মাসে বিভিন্ন যানবাহন স্ট্যান্ডের টাকা তোলা নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, মারামারিসহ নানা ঘটনায় একাধিক মামলা হয়েছে। পৌর শহরের বিভিন্ন স্ট্যান্ড যুবলীগের দখলে বলে জানিয়েছে পুলিশের একটি সূত্র। অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে গত ২৮ আগস্ট রাতে যুবলীগ কর্মী আসাদুজ্জামান আসাদকে হাত-পা থেঁতলে হত্যা করা হয়। এর আগের মাসে মারধরের শিকার আসাদ মামলা করেছিলেন মনি গ্রুপের কয়েক কর্মীর বিরুদ্ধে।
ওই মামলার পর থেকেই উত্তেজনা বাড়ছিল। আসাদের বিরুদ্ধেও মারামারির অভিযোগে মামলা হয়েছিল। দু’পক্ষের লোকজন জামিনে ছিলেন বলে জানিয়েছেন মুক্তাগাছা থানার ওসি মো. আবদুল মাজেদ।
মনি আগে ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে জানান বিএনপি নেতারা। পরবর্তী সময়ে মেয়র বিল্লাল হোসেনের মেয়েকে বিয়ে করে দল পাল্টেছেন। ২০২১ সালে মুক্তাগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক চিকিৎসককে মারধর করে জেলে যান মনি। সেই মামলা আপস-মীমাংসা হয়। চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় যুবলীগ থেকে সাময়িক বহিষ্কার হয়েছিলেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে চাঁদাবাজি ও মারামারির একটি মামলাও রয়েছে। বিভিন্ন অভিযোগ সম্পর্কে জানতে বারবার ফোন করা হলেও মনির বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
- বিষয় :
- হত্যার আসামি
- হত্যা
- বেপরোয়া
- ময়মনসিংহ
- মুক্তাগাছা