ঈদযাত্রায় লঞ্চের পর ট্রেনে চড়তেও জাতীয় পরিচয়পত্র লাগবে। ঈদযাত্রার তথ্য জানাতে বুধবার রেলভবনে সংবাদ সম্মেলনে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, টিকেট কিনতে হলে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) অবশ্যই দেখাতে হবে। একজন চারটি টিকেট কিনতে পারবে, সেক্ষেত্রে অন্য তিনজনের জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে জন্ম নিবন্ধন সনদ অথবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বা যেকোনো পরিচয়পত্রের ফটোকপি দিতে হবে।

যেসব সাধারণ প্রান্তিক মানুষের এনআইডি বা জন্মসনদ নেই তারা কি ট্রেনে চড়বেন না- এ প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘পরিচয়পত্র ছাড়া দেশে মানুষ নেই। সব সরকারি কাজ এনআইডিতে হয়। করোনার টিকাও এনআইডির মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে।’ সব মানুষের পরিচয়পত্র না থাকায় শেষ পর্যন্ত এনআইডি ছাড়াই টিকা দেওয়া হয়েছে- এ তথ্য জানানোর পর মন্ত্রী বলেন, ‘সব যাত্রীকে রেল নিতে পারবে না। এ দায়িত্ব আমরা নিইনি।’

২০২০ সালে পরিচয়পত্র দেখিয়ে ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছিল। কিন্তু যাত্রীদের দুর্ভোগে এ নিয়ে বাতিল হয়। তবে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘টিকিট যার ভ্রমণ তার।’ কালোবাজারি, অনিয়ম বন্ধে পরিচয়পত্রের নিয়ম ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।

রেলমন্ত্রী জানান, ২৩ এপ্রিল থেকে ঈদযাত্রার ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হবে। ২৩ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত ২৭ এপ্রিল থেকে ১ মে'র ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হবে। রোজ ৩০টি হলে অর্থাৎ ৩ মে ঈদ হলে তার আগের দিনের টিকিটও আগাম হিসেবে বিক্রি করা হবে। ঈদযাত্রায় দৈনিক ২৬ হাজার ৬৬৪টি আসনের টিকিট বিক্রি হবে। অর্ধেক অর্থাৎ ১৩ হাজার ৩৩২টি টিকিট অনলাইনে বিক্রি হবে।

টানা ১৫ বছর টিকিট বিক্রির দায়িত্বে থাকা সিএনএসকে বাদ দিয়ে নতুন অপারেটর নিয়োগ করেছে রেল। গত ২৬ মার্চ থেকে ট্রেনের টিকিট যৌথভাবে বিক্রি করছে সহজ, সিনোসিস এবং ভিনসেন নামের তিন প্রতিষ্ঠান। রেলমন্ত্রী বলেন, আগের বছরগুলোর মতো এবার অনলাইনে ভোগান্তি হবে না।

যাত্রীরা অনলাইনে টিকিট পায় না- এর জবাবে মন্ত্রী বলেছেন, টিকিট মাত্র ১৩ হাজার। একসঙ্গে পাঁচ লাখ মানুষ চেষ্টা করে অনলাইনে। যে পায় না, সেই হৈ চৈ করে। আর যে পায় সে চুপচাপ থাকে।

ভিড় কমাতে কমলাপুর থেকে শুধু রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের ট্রেনের টিকিট দেওয়া হবে। বিমানন্দর থেকে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীর, তেজগাঁও থেকে ময়মনসিংহ, জামালাপুরের, ক্যান্টনমেন্ট থেকে নেত্রকোনা, মোহনগঞ্জের এবং ফুলবাড়িয়া থেকে সিলেট, কিশোরগঞ্জহগামী ট্রেনের টিকিট দেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে রেল সচিব ড. হুমায়ুন কবীর, রেলওয়ের মহাপরিচালক ডিএন মজুমদারসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।