ধর্মের ভাই ডেকে বাড়িতে অবস্থান, সুযোগ বুঝে শিশু চুরি

মায়ের কোলে শিশু মাসুমা
চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২৪ | ১৭:৪৩
দুনিয়াতে আপন কেউ নেই বলে জাহাঙ্গীর মিয়াকে ধর্মের ভাই ডাকেন ফাতেমা খাতুন। এরপর অবস্থান নেন বাড়িতে। সুযোগ বুঝে চুরি করেন জাহাঙ্গীর মিয়ার আদরের আট মাস বয়সী সন্তান মাসুমা আক্তারকে। এক লাখ টাকার চুক্তিতে শিশুটিকে বিক্রি করে দেন শায়েস্তাগঞ্জের মশিউর নামে এক ব্যক্তির কাছে। ঘটনাটি ঘটেছে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট পৌর শহরের বাগবাড়ি এলাকায়।
ফাতেমা আক্তারকে সোমবার গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি মাধবপুর উপজেলার হরিতলা গ্রামের বাসিন্দা। গ্রেপ্তারের পর মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ঝুমু সরকারের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এর আগে তার দেওয়া তথ্যে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার রেলস্টেশনের পাশের হিজড়া পল্লী থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ।
কাঠ ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর মিয়ার বাড়ি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার নাজিরপুর গ্রামে। ব্যবসার প্রয়োজনে স্ত্রী–সন্তান নিয়ে চুনারুঘাটের বাগবাড়ি এলাকায় বসবাস করছেন। কাজের সুবাদে ফাতেমার সঙ্গে তার পরিচয়। সে তাকে ধর্মের ভাই ডাকে। এলাকায় তার কোনো আত্মীয় না থাকায় গত ২৮ জুলাই জাহাঙ্গীরের বাসায় আশ্রয় নেয়। রাতে খাওয়া দাওয়া করে তারা ঘুমিয়ে পড়ে। পরদিন ভোরে ঘুম ভাঙ্গলে জাহাঙ্গীর দেখেন দুই ছেলে ঘুমিয়ে আছে। কিন্তু আট মাস বয়সী মাসুমা নেই। চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন চলে আসে। তারা ফাতেমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে একেকবার একেক কথা বলে। সন্দেহ হলে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পরে জাহাঙ্গীর মিয়া পাতানো বোন ফাতেমা খাতুনের নামে এবং অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
শিশুর মা সাথী আক্তার জানান, ফাতেমা তাদের সরলতার সুযোগ নিয়ে আদরের সন্তানকে চুরি করে পাচার করে। সে শিশু পাচারকারী চক্রের সদস্য। তিনি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।
চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিল্লোল রায় জানান, ফাতেমার দেওয়া তথ্যে শিশুটিকে শায়েস্তাগঞ্জ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।