ঢাকা বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

খুমেক হাসপাতাল

‘ভয়ে’ অনুপস্থিত অর্ধশত চিকিৎসক, ভোগান্তি

‘ভয়ে’ অনুপস্থিত অর্ধশত চিকিৎসক, ভোগান্তি

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসক না থাকায় বুধবার দুর্ভোগে পড়েন রোগীরা। ছবি: সমকাল

খুলনা ব্যুরো

প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ০৪:০২

খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের অর্ধশতাধিক চিকিৎসক গতকাল বুধবার কর্মস্থলে আসেননি। এতে রোগীরা চরম ভোগান্তির শিকার হয়েছেন।

চিকিৎসকদের দাবি, এক চিকিৎসকের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীদের একাংশ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালককে পদত্যাগে বাধ্য এবং ৫৯ চিকিৎসককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। ‘নিরাপত্তাহীনতার’ ভয় থেকে তারা আসেননি।

জানা যায়, মঙ্গলবার হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের প্রধান ডা. মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে একদল ইন্টার্ন চিকিৎসক তত্ত্বাবধায়ক ও ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক ডা. মো. আখতারুজ্জামানকে পদত্যাগে বাধ্য করান। তারা পরিচালক, সহকারী পরিচালক, দুই আবাসিক মেডিকেল অফিসারসহ ৫৯ জনকে কলেজ ও হাসপাতালে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভয়ে তালিকার বেশির ভাগ চিকিৎসক কলেজ ও হাসপাতালে কাজে আসেননি।

এ বিষয়ে আরএমও ডা. সুমন রায় বলেন, ‘আমরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। এ কারণে হাসপাতালে যাইনি।’

সরেজমিন হাসপাতালের বহির্বিভাগে কর্মচারী থাকলেও, কোনো চিকিৎসক পাওয়া যায়নি। রোগীরা ভিড় করছেন। তেরখাদা থেকে স্ত্রীকে নিয়ে আসা লিটন মীর বলেন, ‘স্ত্রী খুব অসুস্থ। ক্লিনিকে দেখানোর সামর্থ্য নেই। এখানে এসে চিকিৎসক পাচ্ছি না। কী করব, বুঝতে পারছি না।’

আখতারুজ্জামানের অভিযোগ, ডা. মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীরা জোর করে পদত্যাগপত্র ও চিকিৎসকদের নামের দুটি তালিকায় আমার স্বাক্ষর নেয়। অবাঞ্ছিতদের তালিকায় আমিও আছি। কেউ কি নিজেই নিজেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে? পরে স্বাস্থ্য সচিবকে লিখিতভাবে এসব জানিয়েছি।

হাসপাতালের পরিচালক ডা. গৌতম কুমার পাল ও সহকারী পরিচালক ডা. নিয়াজ মুস্তাফি চৌধুরী ছুটিতে। গতকাল আসেননি ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক ডা.আখতারুজ্জামান এবং তালিকায় নাম থাকা আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার ও ডা. সুমন রায়। কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ আগেই পদত্যাগ করেছেন। ফলে দিনভর অভিভাবকহীন ছিল হাসপাতাল।

এদিকে, খবর পেয়ে সকালে মহানগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক মো. ফারুক হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিএনপির নাম ভাঙিয়ে হাসপাতালে একটি পক্ষ বিশৃঙ্খলা করছে। কিন্তু এসে অভিযুক্ত ডা. মোস্তফা কামালকে পাইনি। বিএনপির সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’

হাসপাতাল পরিদর্শন করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সাজিদুল ইসলাম বাপ্পীও। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ব্যক্তি আক্রোশে একজনকে সরিয়ে আরেকজনকে বসানোর চেষ্টা হচ্ছে। জোর করে সরিয়ে দেওয়া আমরা সমর্থন করি না। কাউকে সরাতে হলে তদন্তের পর নিয়ম মেনে করতে হবে। স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে।’

আরও পড়ুন

×