টঙ্গীর মাঠ প্রস্তুত করছেন জুবায়ের অনুসারীরা
সাদপন্থিদের ইজতেমা এক সপ্তাহ পেছাতে বলেছে সরকার

ফাইল ছবি
সমকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ জানুয়ারি ২০২৫ | ০৫:১০
দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষ। আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাওলানা জুবায়ের আহমেদের অনুসারীদের ইজতেমা হবে। তারা ইজতেমার জন্য মাঠ প্রস্তুত করছেন। ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইজতেমা আয়োজনের কথা মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভির অনুসারীদের। তবে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের ইজতেমা এক সপ্তাহ পেছানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
তাবলিগের মুরব্বি ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভির কিছু বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ২০১৮ সালে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজকদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়। এর পর থেকে দু’পক্ষ দুই পর্বে ইজতেমায় অংশ নিচ্ছে। গত ১৭ নভেম্বর স্বররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে ২০২৫ সালে দু’পর্বের বিশ্ব ইজতেমার তারিখ জানানো হয়।
গত ডিসেম্বরে দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ চরম আকার নেয়। ২০ ডিসেম্বর থেকে পাঁচ দিনের জোড় ইজতেমা করার জন্য মাওলানা সাদ অনুসারী মুসল্লিরা ১৮ ডিসেম্বর ভোরে ইজতেমা মাঠে প্রবেশের চেষ্টা করেন। তবে জুবায়েরপন্থিরা আগে থেকেই টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে অবস্থান করছিলেন। এ সময় দু’পক্ষের সংঘর্ষে চারজন নিহত এবং শতাধিক আহত হন। এর পরই ইজতেমা মাঠে জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। গত ২ জানুয়ারি এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। এর পরই মাঠ প্রস্তুতির কাজ শুরু করেন মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা। এই গ্রুপের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান বলেন, ‘সাদপন্থিরা ২০১৮ সালে ও ২০২৪ সালে রাতে যে হামলা চালিয়েছে, অবশ্যই এর বিচার হওয়া দরকার। তাদের নিষিদ্ধ করতে হবে। সাদপন্থিদের ইজতেমা করার কোনো প্রশ্নই আসে না।’
বিশ্ব ইজতেমাসহ তাবলিগ জামাতের সর্বিক পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মাওলানা সাদের অনুসারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। তাবলিগ জামাতের ৫ নেতা এতে অংশ নেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, বৈঠকে দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা (সাদপন্থিদের) এক সপ্তাহ পেছানোর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়। বৈঠকে মাওলানা সাদের অনুসারীরা বলেন, তারা মুরব্বিদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন।
সাদপন্থিদের মিডিয়া সমন্বয়ক আবু সায়েম সমকালকে বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে ইজতেমার আয়োজন নিয়ে বৈঠকে কথা হয়েছে। তিনি আশা করেন, সময়মতো প্রচুর বিদেশি মেহমানসহ বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে গত সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েটসহ ঢাকার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তাবলিগপন্থি শিক্ষকরা সংবাদ সম্মেলনে দু’পক্ষের উদ্দেশে কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে– কাকরাইল মসজিদে আমলের সময় বণ্টন উভয় পক্ষের জন্য সমান করা অর্থাৎ এক মাস এক মাস করা। টঙ্গীর ইজতেমা ময়দান উভয় পক্ষের জন্য সমানভাবে (জানুয়ারি-জুন ও জুলাই-ডিসেম্বর) ভাগ করে দেওয়া। দেশের অন্যান্য মসজিদে আমলের সময় পনেরো দিন পনেরো দিন করা।
- বিষয় :
- তাবলিগ জামাত
- টঙ্গী