শেষ মুহূর্তে রাইসির হেলিকপ্টারে কী ঘটেছিল
ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয় ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশে। ছবি: সংগৃহীত
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ মে ২০২৪ | ২১:১৯
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগে কী ঘটেছিল, সে সম্পর্কে এখন পর্যন্ত খুব কমই জানা গেছে। এবার এ ঘটনার আরও কিছু তথ্য সামনে এনেছেন ইরানের প্রেসিডেন্টের চিফ অব স্টাফ গোলাম হোসেইন ইসমাইলি।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট রাইসির কপ্টার যেখানে বিধ্বস্ত হয়েছিল, ইরানের সেই ভারজাকান অঞ্চলের আবহাওয়া পরিস্থিতি উড্ডয়নের শুরুতে এবং বেশির ভাগ সময় ভালোই ছিল। আজারবাইজান-ইরান সীমান্তে বাঁধ উদ্বোধনের অনুষ্ঠান থেকে ফিরে আসার পথে রাইসির বহরে তিনটি হেলিকপ্টার ছিল। এর একটিতে ইসমাইলি ছিলেন। উড্ডয়নের এক পর্যায়ে রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হলেও অন্য দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে অবতরণ করে।
তিনি বলেন, ঘটনার দিন দুপুর ১টার দিকে হেলিকপ্টারগুলো যাত্রা শুরু করে। স্থানীয় সময় ১৯ মে ওই এলাকার আবহাওয়া স্বাভাবিকই ছিল। প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি মাঝখানে ছিল। এর সামনে ও পেছনে ছিল অন্য দুটি কপ্টার।
তিনটি হেলিকপ্টার নিয়ে গঠিত বহরটির দায়িত্বভার ছিল প্রেসিডেন্ট রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের পাইলটের ওপর। ইসমাইলি বলেন, যাত্রা শুরুর ৪৫ মিনিট পর রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের পাইলট কাছাকাছি থাকা মেঘ এড়াতে অন্য দুটি হেলিকপ্টারের পাইলটকে আরও উঁচুতে উঠে ভ্রমণ করার নির্দেশ দেন। সে সময় পর্যন্ত রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি ছিল মাঝে এবং অন্য দুটি হেলিকপ্টার সামনে ও পেছনে ছিল। হঠাৎ রাইসির হেলিকপ্টার উধাও হয়ে যায়। মেঘের ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার ৩০ সেকেন্ড পর আমাদের পাইলট লক্ষ্য করলেন, মাঝখানের হেলিকপ্টারটি অদৃশ্য হয়ে গেছে। এরপর আমাদের পাইলট বৃত্তাকারে ঘুরতে থাকেন এবং হেলিকপ্টারটি খুঁজতে থাকেন।
ইসমাইলি আরও বলেন, এরপর রেডিও ডিভাইসের মাধ্যমে প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটির সঙ্গে যোগাযোগ করার একাধিক প্রচেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু সেটি সম্ভব হয়নি, আবার মেঘের কারণে তাদের হেলিকপ্টারটি নিচেও নামতে পারছিল না। এরপর তাদের হেলিকপ্টারটি সামনের দিকে তাদের যাত্রা আবার শুরু করে এবং কিছু সময় পরই নিকটবর্তী একটি তামার খনিতে অবতরণ করে।
এদিকে রাইসিকে বহনকারী কপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়ে ৯ জনের মৃত্যু নিয়ে প্রতিদিনই জল্পনা-কল্পনার ডালাপালা মেলছে। দুর্ঘটনার পরপরই ইসরাইলি মিডিয়ায় মৃত্যুর খবর, আমেরিকার পক্ষে সাফাই, ইরানের ভেতরে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব, বহরে থাকা অন্য দুই হেলিকপ্টারের নিরাপদে ফেরত আসাসহ বিভিন্ন ঘটনা জন্ম দিচ্ছে নানামুখী প্রশ্ন আর বিতর্কের। এর মধ্যেই নতুন করে ঘি ঢেলেছে ফ্রান্সের একটি গোষ্ঠী।
ফরাসি টেলিভিশন চ্যানেলের একটি বিতর্ক অনুষ্ঠানে উঠে আসা বক্তব্যটি তুমুল ভাইরাল হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, সরষের মধ্যেই নাকি ভূত ছিল। ইরানি প্রেসিডেন্ট রাইসিকে বহনকারী সেই হেলিকপ্টারের পাইলট ছিলেন ইসরায়েলের দুর্ধর্ষ গুপ্তচর বাহিনী মোসাদের এজেন্ট। এই তত্ত্ব ঘিরে এখন সর্বত্র শোরগোল। হামাসও এ দাবিতে সিলমোহর ফেলেছে। একাধিক টেলিগ্রাম চ্যানেলে বিষয়টি শেয়ার করা হচ্ছে। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।
- বিষয় :
- ইরান
- হেলিকপ্টার
- ইব্রাহিম রাইসি