অস্ত্র মামলায় গোল্ডেন মনির খালাস, জানা গেল আড়াই মাস পর

মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনির। ফাইল ছবি
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১৭:৪৬ | আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১৭:৫৩
রাজধানীর বাড্ডা থানার অস্ত্র আইনের মামলায় আলোচিত মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরকে খালাস দিয়েছেন আদালত। অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় ঢাকার ১ নম্বর বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আসাদুজ্জামান গত ৫ ফেব্রুয়ারি খালাস দিয়ে এ রায় ঘোষণা করেন। তবে এতদিন রায়ের বিষয়টি গোপন রাখা হয়েছিল। আড়াই মাসের বেশি সময় পর বৃহস্পতিবার ওই আদালতের অতিরিক্ত পিপি তাপস কুমার পাল বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
রায়ে বলা হয়, ২০২০ সালের ২০ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৬টায় মনির হোসেনের বাড্ডার বাসার শয়নকক্ষে খাটের তোশকের নিচ থেকে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
রায়ে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রক্ষের সাক্ষীদের তথ্য বিশ্লেষণে প্রমাণিত হয়, মনিরের বাসায় সকাল সাড়ে ৬টায় নয়, অভিযান চালানো হয় রাত সাড়ে ১০টায়। বিশেষ উদ্দেশ্যে মনিরের বাসায় অভিযান চালানো হয়। রাষ্ট্রপক্ষের মামলাটি সাজানো। অন্য সাক্ষীরা মনিরের শয়নকক্ষ থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারে যে সাক্ষ্য দিয়েছেন, তা আদৌ বিশ্বাসযোগ্য নয়।
মনিরের আইনজীবী দবির উদ্দিন জানান, রায়ে প্রমাণিত হয়েছে, মনিরকে হয়রানির উদ্দেশ্যে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা করা হয়।
২০২০ সালের ২০ নভেম্বর রাতে রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় ডিআইটি প্রজেক্ট এলাকায় মনিরের বাড়ি সন্দেহভাজন হিসেবে ঘেরাও করে র্যাব। পরদিন ২১ নভেম্বর দুপুর পর্যন্ত টানা ৮ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে ওই বাসা থেকে ৬০০ ভরি সোনার গয়না, বিদেশি পিস্তল-গুলি, মদ, ১০টি দেশের বিপুল পরিমাণ মুদ্রা ও নগদ ১ কোটি ৯ লাখ টাকা জব্দ করা হয়।
এরপর অস্ত্র, বিশেষ ক্ষমতা এবং মাদক আইনে বাড্ডা থানায় পৃথক তিন মামলা করে র্যাব। এরপর ২৭ দিনের রিমান্ড শেষে গোল্ডেন মনিরকে কারাগারে পাঠানো হয়। এছাড়া জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে একটি মামলা হয়। এর মধ্যে সিআইডির করা মানি লন্ডারিংয়ের মামলায় তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। বাকি দুইটি মামলা সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে আছে।
২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি ঢাকার সিএমএম আদালতে অস্ত্র ও মাদক মামলায় চার্জশিট দাখিল করে ডিবি। ওই বছর ২৫ এপ্রিল তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন ঢাকার ১ নম্বর বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক কেএম ইমরুল কায়েশ। এরপর তিন বছরে রাষ্ট্রপক্ষে ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাকে খালাস দেন আদালত।
র্যাব জানায়, নব্বইয়ের দশকে রাজধানীর গাউছিয়ায় একটি কাপড়ের দোকানের কর্মচারী ছিলেন মনির। সেই চাকরি ছেড়ে তিনি ক্রোকারিজের ব্যবসা শুরু করেন। এরপর লাগেজ ব্যবসা অর্থাৎ ট্যাপ ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন দেশ থেকে মালামাল আনতেন মনির।
একপর্যায়ে তিনি স্বর্ণ চোরাকারবারিতে জড়িয়ে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ অবৈধপথে বিদেশ থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। সে কারণেই তার নাম হয়ে যায় ‘গোল্ডেন মনির’। স্বর্ণ চোরাকারবারে জড়ানোর কারণে ২০০৭ সালে বিশেষ ক্ষমতা আইনে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়।
- বিষয় :
- গোল্ডেন মনির
- জামিন
- অস্ত্র জব্দ
- মামলা