ঢাকা বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

কোহলিদের ‘দুবাইপ্রীতি’

কোহলিদের ‘দুবাইপ্রীতি’

বিরাট কোহলি

নাজমুল হক নোবেল, দুবাই থেকে

প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ০১:১৩ | আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ০৮:১৯

দুবাইয়ের যে হোটেল পাকিস্তান দল চেকআউট করেছে, সেখানেই গতকাল ব্যাগ-পত্তর নিয়ে উঠেছে নিউজিল্যান্ড দল। রোববার পর্যন্ত এই শহরেই থাকবে কিউইরা। বাংলাদেশকে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করায় ভারত ম্যাচের আগে লম্বা একটা বিশ্রামের সুযোগ পাচ্ছে তারা। তবে রোববারের পর আবার তাদের কিটস ব্যাগ গুছিয়ে রওনা দিতে হবে লাহোরে। সেখানে সেমিফাইনাল জিতলে ফের আসতে হবে দুবাইয়ে ফাইনাল খেলার জন্য। নিউজিল্যান্ড দল যখন ব্যস্ত পর্যটক; রোহিত- কোহলিরা যেন সেখানে দুবাইতেই ঘরবাড়ি বানিয়ে নিয়েছেন! হাইব্রিড মডেলের শর্ত অনুযায়ী ঠিক হয়েছে, তারা সব ম্যাচ দুবাইতেই খেলবেন। যে কারণে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্বাগতিক হয়েও অন্য দেশে গিয়ে খেলতে হয়েছে পাকিস্তানকে।

২০২৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফাইনালে হারার পর ভারতের তখনকার কোচ রাহুল দ্রাবিড় তাদের ভ্রমণ-ক্লান্তির কথা বলেছিলেন। আক্ষেপ করেছিলেন এই বলে, অন্য সব দল যেখানে একটি ভেন্যুতে অন্তত দুটি করে ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছে, সেখানে ভারতকে প্রতিটি ভেন্যুতে গিয়ে খেলতে হয়েছে। স্বাগতিক হওয়ার কারণেই সেবার ভারতকে একেক শহরে গিয়ে খেলতে হয়েছিল। এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে রোহিত-কোহলিদের অন্তত সেই ক্লান্তির ব্যাপার নেই। দুবাইয়ের একটি ভেন্যুতেই নিজেদের সব ম্যাচ খেলার বাড়তি সুযোগ পাচ্ছেন তারা। যে সুবিধার কথা স্বীকার করেছেন বিরাট কোহলিও।

পাকিস্তানকে হারানোর পর কোহলি বলেছিলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে প্রথম ম্যাচটি এই ভেন্যুতে খেলার কারণেই পিচ ও কন্ডিশন সম্পর্কে ধারণা ছিল তাদের। দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম যে ভারতীয়দের জন্য পয়া– সেটা পরিসংখ্যানেও প্রমাণ রাখে। এই মাঠে এ পর্যন্ত মোট আটটি ওয়ানডে খেলেছে ভারতীয় দল। যার মধ্যে সাতটিতেই জিতেছে তারা। ৩৫৮৫ রান তুলেছে তারা সব ম্যাচ খেলে। উইকেট শিকার করেছে তারা ১১১টি। টি২০ ফরম্যাটেও ভারতীয়দের কাছে বেশ পছন্দ এই ভেন্যু। এখানে এখন পর্যন্ত কোহলিরা মোট টি২০ খেলেছেন কোহলিরা ৯টি। যার মধ্যে পাঁচটিতেই জয় পেয়েছেন। অবশ্য এই মাঠে এখন পর্যন্ত কোনো টেস্ট খেলা হয়নি ভারতের। পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ তারা খেলে না দেখে বাবর আজমদের এই হোম ভেন্যুতে লাল বলে খেলা হয়নি বুমরাহ-সিরাজদের।

নব্বইয়ের দশকে আরব আমিরাতের শারজাহর মাঠটি ঘিরে একটা আতঙ্ক থাকত ভারতের। সেখানে পাকিস্তানের সঙ্গে খেলা মানেই বড় একটা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়া। কিন্তু ২০১৮ সাল থেকে দুবাইয়ের এই মাঠে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট গড়ানোর পর ভারতীয় দল আমিরাতে এসে আর অন্য কোথাও যায়নি। ২০১৮ সালের এশিয়া কাপে অন্যান্য দল যেখানে আবুধাবি ও শারজাহতে খেলতে গিয়েছে। কোহলিরা কিন্তু তাদের সব ম্যাচ খেলেছিল এই মাঠেই। একে তো প্রবাসী ভারতীয় দর্শকদের ব্যাপক উপস্থিতি, তার ওপর এই শহরে আইসিসি একাডেমি মাঠের অনুশীলনের সুবিধা। সব মিলিয়ে দুবাই যেন এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের স্বাগতিক ভেন্যু! ভারতীয় দলের এই দুবাইপ্রীতির প্রতি নীরব সমর্থন রয়েছে আইসিসি ও স্বাগতিক আমিরাত বোর্ডের। কেননা এই মাঠে ২৫ হাজার দর্শকের মতো বিশাল গ্যালারি আবুধাবি কিংবা শারজাহতে নেই। যে কারণে ভারতের কোনো ম্যাচ হলেই টিকিটের যে চাহিদা বেড়ে যায় এবং যে আর্থিক সম্ভাবনা থাকে, তা কেবল দুবাইয়ের এই মাঠ দিয়েই পূরণ করা সম্ভব।

আরও পড়ুন

×