গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচন
এবার কেন্দ্রে ভোটার আনাই চ্যালেঞ্জ
-samakal-63afd8f5d5409.jpg)
ভবতোষ রায় মনা, ফুলছড়ি (গাইবান্ধা)
প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ | ০৬:৩৮ | আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ | ০৬:৩৮
'আর ভোট দিবার মন্যায় না, হামাঘরে আমলের ভোট আর এখনকার ভোট মেল্যা তফাত। ক'দিন আগোত ভোট দিলুম তাক বন্ধ হয়্যা গেল। হামাঘরেও তো সময়ের দাম আচে, নাকি! আবার বলে ভোট হবে। তবে এব্যারক্যা কারও চা খাবার নই, ট্যাকা দিলেও নিব্যার নই, যোগ্য নোকোক ভোট কোনা দেমো।'
গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন প্রসঙ্গে ফুলছড়ির যমুনা নদীর পাড়ে গলনা চরের কৃষক আজিজার রহমান বলছিলেন এসব কথা।
এ আসনে ১২ অক্টোবরের উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে হাটবাজার ও চায়ের দোকানগুলোতে আলোচনার ঝড় উঠেছিল, এবার দেখা যাচ্ছে বিপরীত চিত্র। আগামী ৪ জানুয়ারি উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রচার জমে ওঠার কথা থাকলেও দেখা পরিবেশ একেবারেই ভিন্ন। এবার ভোটকেন্দ্রে ভোটার আনাটাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রার্থীদের। গত ১২ অক্টোবর অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কারণে ভোট বন্ধ করে দেওয়ায় মানুষ আগ্রহ হারিয়েছে বলে জানান একাধিক ভোটার। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা দিনরাত সভা-সমাবেশ, উঠান বৈঠক করছেন এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাইছেন।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন, জাতীয় পার্টির এ এইচ এম গোলাম শহীদ, বিকল্পধারার জাহাঙ্গীর আলম, সৈয়দ মাহবুবুর রহমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাত।
ফুলছড়ি উপজেলার ছালুয়া গ্রামের রাজমিস্ত্রি আবদুল সোবহান বলেন, 'হামার ঘরে ডেপটি ইসপিক্যার (ডেপুটি স্পিকার) ফজলে রাব্বী মরি গ্যাচে। তাক দ্যাশের সগ মানুস চিনছিল। সেংকা একখান মানুষ দরকার হামাঘরে। এবার হামার ঘরে আরেকযোন ফজলে রাব্বী বানান নাগবে। সেইজন্যে ভোটটা চিনতা করি দেওয়ান নাগবে।' পূর্বছালুয়া গ্রামের শাহ আলম যাদু বলেন, উপনির্বাচনে পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্ব্বিতা করছেন। এর মধ্যে তিনজনই অতিথি পাখি। তাঁদের মধ্যে একজন ভোট করবেন না বেেঘাষণা দিয়েছেন। অন্য দুই প্রার্থীকে কেবল ভোটের সময় দেখা যায়।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন বলেন, নৌকা উন্নয়নের প্রতীক। এ প্রতীকে ভোট দিলে দেশের উন্নয়ন হয়। ভোটাররা নৌকায় ভোট দিতে ভুল করবেন না। নির্বাচিত হলে গাইবান্ধার বালাসি থেকে জামালপুরের বাহাদুরাবাদ পর্যন্ত টানেল নির্মাণ ও নদী ভাঙনরোধে উদ্যোগ নেবেন। জাতীয় পার্টির গোলাম শহীদ রঞ্জু বলেন, ১২ অক্টোবর নির্বাচন বাতিল হওয়ার মধ্য দিয়ে জনগণের অধিকার আবার ফিরে আসছে। নির্বাচন কোনোভাবে প্রভাবিত হবে না- সেই বিশ্বাস নিয়ে তাঁরা এগিয়ে যাচ্ছেন।
গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের সংসদ সদস্য ও ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী ২৩ জুলাই মারা যান। নির্বাচন কমিশন আসনটি শূন্য ঘোষণার পর ১২ অক্টোবর উপনির্বাচনে ভোট হচ্ছিল। এতে অনিয়ম করায় তা বাতিল করা হয়।