ঢাকা বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

অটোচালকদের মধ্যে 'দড়ির ফাঁস' আতঙ্ক

অটোচালকদের মধ্যে 'দড়ির ফাঁস' আতঙ্ক

আশুগঞ্জ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ০৬:২০

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের গ্রামীণ কয়েকটি সড়কে রাতের বেলা চলাচল করতে ভয় পান অটোরিকশাচালকরা। যাত্রীবেশী ছিনতাইকারীরা ওই সড়কগুলোতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। একটি চক্র 'টার্গেট' করা অটোচালকদের সঙ্গে সখ্য গড়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করে। পরে নির্জন জায়গায় সুযোগ বুঝে দড়ি দিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। এভাবে চালককে হত্যার পর অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়। সাম্প্রতিক দুটি ঘটনায় পর এসব তথ্য জানা গেছে।

এরই মধ্যে গতকাল শনিবার পুলিশ জানিয়েছে, গত ২২ ডিসেম্বর উপজেলার আন্দিদিল এলাকার ডোবায় পাওয়া অটোচালক মো. ইমন (১২) হত্যায় জড়িত তিনজনকে শুক্রবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একই দিন গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৯ ফেব্রুয়ারি সোহাগপুর গয়নাঘাটে অপর চালক সাইফুল ইসলামকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় জড়িত তিনজনকে। শনিবার তাদের আদালতে পাঠানো হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর-আশুগঞ্জ) মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন রেজা এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

ইমন হত্যায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলো- উপজেলার আড়াইসিধার মো. রাজু মিয়া ওরফে রহিজ শাহ, সদরের মৈন্দ গ্রামের মোখলেছ মিয়া ও সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের জাহাঙ্গীর। এদের মধ্যে জাহাঙ্গীর রিকশাটির ক্রেতা।

নিহত শিশু ইমন উপজেলার মৈশাইর গ্রামের নাসির মিয়ার ছেলে। সংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, ১৮ ডিসেম্বর তার রিকশায় ওঠে রাজু মিয়াসহ কয়েকজন। পরে আন্দিদিল এলাকায় ইমনের গলায় দড়ির ফাঁস দিয়ে হত্যা করে। পরে পাশের ডোবায় লাশ ফেলে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ওই চক্রটির সদস্যরা ওই রিকশা ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে সরাইলের কালিকচ্ছ বাজারের জাহাঙ্গীরের কাছে।

ইমনের লাশ উদ্ধারের পর বাবা নাসির মিয়া মামলা করেন। পুলিশ শুরুতে রাজুকে আটক করে। পরে তার তথ্যে মোখলেছ ও জাহাঙ্গীরকে আটক করা হয়। ওই অটোরিকশাটির মালিক শারীরিক প্রতিবন্ধী মো. মাইন উদ্দিন। তাঁর আয়েরও একমাত্র সম্বল ছিল সেটি।

তালশহর (পশ্চিম) ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. এনামুল হক বলেন, সংসারে সহায়তার জন্য ছেলেটি অটো চালাত।

সাইফুলকে হত্যাচেষ্টায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলো- জেলা সদরের মৈন গ্রামের শিপন, আশুগঞ্জের আড়াইসিধা গ্রামের মামুন ও রাব্বি ওরফে কালু।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে মো. সাইফুল ইসলামের অটোরিকশায় ওঠে রাব্বিসহ কয়েকজন। সোহাগপুর গয়নাঘাট এলাকায় পৌঁছে সাইফুলের গলায় দড়ি বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় অটোরিকশা মালিক চম্পা মিয়া শুক্রবার মামলা করেন।

এ বিষয়ে শনিবার মো. অনিক, আসমত আলী, জাকিরসহ কয়েকজন অটোরিকশা চালক জানিয়েছেন, কয়েকটি সড়কে রাতে মানুষের চলাচল কম থাকে। এসব সড়কেই ছিনতাই বেশি হয়। এর মধ্যে আশুগঞ্জ-তালশহর, বাহাদুরপুর-তালশহর, মৈশাইর-আন্দিদিল-তালশহর ও বায়েক-শরীফপুর এবং আশুগঞ্জ-সোহাগপুর-গয়নাঘাট সড়কে চলাচল নিয়ে তাঁরা আতঙ্কিত।

আশুগঞ্জ রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. সবুর মুন্সি ও সাধারণ সম্পাদক মো. অলেছ সরকারও এসব তথ্য নিশ্চিত করে। তাঁরা বলছেন, কয়েকটি রাস্তায় ভাড়া নিয়ে না যেতে চালকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।

আরও পড়ুন

×