বন্ধুকে ডেকে নিয়ে হত্যা, তিন জনের যাবজ্জীবন

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৩ | ১০:০০ | আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৩ | ১০:২৩
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মাছ ও মাদক ব্যবসার টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ডেকে নিয়ে মো. নিশান নামে একজনকে হত্যার দায়ে তিন আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।
লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ভিকটিম ও আসামিরা বন্ধু ছিলেন ৷ মাছ ও মাদক ব্যবসার টাকা নিয়ে ভিকটিমের সঙ্গে তাদের দ্বন্দ্ব ছিল। এর জের ধরেই ভিকটিমকে হত্যা করা হয়। আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রামণিত হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন জেলার রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরকাছিয়া গ্রামে ওসমান গণি ছৈয়ালের ছেলে নুর মোহাম্মদ , একই এলাকার খোরশেদ মোল্লার ছেলে নোমান হোসেন ও একই ইউনিয়নের চরলক্ষ্মী গ্রামের সেকান্তর আলী সর্দারের ছেলে আব্দুল্লাহ । রায়ের সময় আসামি নুর মোহাম্মদ ছৈয়াল ও নোমান হোসেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অপর আসামি আব্দুল্লাহ প্রকাশ ওরফে জাইল্লা আব্দুল্লাহ পলাতক রয়েছে।
আদালত ও এজাহার সূত্র জানায়, ভিকটিম নিশান লক্ষ্মীপুর পৌরসভার পশ্চিম লক্ষ্মীপুর এলাকার আবদুল বারেকের পালকপুত্র। তিনি স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে রায়পুরের চরকাছিয়া গ্রামে বসবাস করতেন। তিনি ওই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা ছিলেন। আসামিদের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব ছিল। এজাহারে নিশানকে কৃষক বলা হলেও তার নির্দিষ্ট কোন পেশা ছিল না। বন্ধুদের সঙ্গে তিনি মাদক ব্যবসায় জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ৬ জানুয়ারি রাতে আসামিরা তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর ওই রাতে তিনি আর ঘরে ফেরেননি। পরদিন নিশানের স্ত্রী বিউটি আক্তার আসামিদের বাড়িতে গিয়ে খোঁজ করেন। সেখানে আসামিদের খোঁজও পাননি তিনি।
এদিকে ৮ জানুয়ারি আসামি নোমান ভিকটিমের স্ত্রীর মোবাইল ফোনে কল দিয়ে জানান 'তাকে (নোমান) যেন বিপদে না জড়ানো হয়'। পরে একইদিন বিকেলে বিউটিকে প্রতিবেশি বিল্লাল হোসেন জানান চরকাছিয়া গ্রামে ভিকটিমের গলায় ফাঁস লাগানো মরদেহ পড়ে আছে। ঘটনাস্থল গিয়ে ভিকটিমের স্ত্রী স্বামীর লাশ শনাক্ত করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। একইদিন নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে রায়পুর থানায় তিনজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৩ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২০২১ সালের ৩১ আগস্ট পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নোয়াখালী কার্যালয়ের পুলিশ পরিদর্শক মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম তিন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে রায় দেন।
- বিষয় :
- বন্ধুকে হত্যা
- হত্যা মামলার রায়
- রায়পুর