ঢাকা মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

নর্ববর্ষের প্রথম প্রহরে জন্ম

মেয়েকে ডাক্তার বানাতে চান রাকিবুল

মেয়েকে ডাক্তার বানাতে চান রাকিবুল

হাসপাতালে স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে রাকিবুল ইসলাম। ছবি: সমকাল

তবিবুর রহমান

প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২৫ | ১৬:৪৫ | আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৫ | ২০:০৫

‘বাংলা নববর্ষের প্রথম প্রহরে আমাদের পরিবারে এসেছে স্বর্গীয় অতিথি, আসমানি পরী। এতে পহেলা বৈশাখের আনন্দে ভিন্ন মাত্র যুক্ত করেছে। যত সংকটই আসুক না কেন, ছোট মেয়েকে ডাক্তার বানাবো’- বলছিলেন রাকিবুল ইসলাম।

পহেলা বৈশাখে মিরপুর-১ নম্বরে মা ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে কন্যা সন্তান জন্ম দেন তার স্ত্রী জেসমিন আক্তার। সেখানেই কথা হয় রাকিবুলের সঙ্গে।

তিনি বলেন, ‘অর্থ সংকটে আমার পাড়াশোনা হয়নি। তবে সন্তানকে সেই সংকট দেখতে দেব না। ছোট মেয়েকে ডাক্তার বানাতে চাই। ডাক্তার হয়ে সে যেন বিনামূল্যে গরিব মানুষের সেবা করবে, এটা আমার স্বপ্ন।'

স্ত্রীর গর্ভে দ্বিতীয় সন্তান আসার পর টাকা জমাতে থাকেন রাকিবুল। এরইমধ্যে কিছু টাকা জমেছে। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তিনি বলেন, 'আশা করি, টাকা-পয়সা নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। দোয়া করবেন যেন আমার দুই সন্তান সুস্থ থাকে।' আর কোনো সন্তান নিতে চান না বলে জানালেন তিনি। 

হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় জেসমিন আক্তারের পাশে দেখা গেল তার সদ্য ভূমিষ্ঠ সন্তানকে। এরই মধ্যে তার নাম রাখা হয়েছে। রাকিবুলের বড় ভাই রাজীব আহমেদ শিশুটির নাম রেখেছেন জেবিন তাবাসসুম। রাকিবুল জানালেন, সন্তান গর্ভে আসার পর নিয়মিত চিকিৎসকের পরার্মশ নিয়েছেন, স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়েছেন। সব রিপোর্ট ভালো ছিল। 

গত রোববার বিকেলে মা ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হন জেসমিন। পহেলা বৈশাখের আগের রাতে তার সন্তান হওয়ার কথা ছিল। রাকিবুল বলেন, 'আমরা স্বাভাবিক প্রসবের জন্য অপেক্ষা করেছি। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর পহেলা বৈশাখ সকাল সাড়ে সাতটায় স্বাভাবিকভাবে সন্তান জন্ম নেয়।' 

রাকিবুলের বাড়ি সিরাজগঞ্জে। ঢাকায় থাকেন সাত বছর ধরে। কিন্তু অল্প পড়াশোনার কারণে অনেক চেষ্টা করেও চাকরি হয়নি। ২০২২ সালে পারিবারিকভাবে জেসমিনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। এখন ইজিবাইক চালিয়ে সংসার চালান রাকিবুল।

তিনি জানান, নর্ববর্ষের প্রথম প্রহরে সন্তান হওয়ায় হাসপাতালের পরিচালক ও চিকিৎসকেরা এসে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তার বাবা নাতিনের জন্য নতুন জমা উপহার দিয়েছেন। নতুন তোয়ালে জড়িয়ে রাখা তার ছোট মেয়ে মায়ের দুধই খাচ্ছে বলে জানান তিনি। 

 জেসমিন আক্তারের বাড়ি ভোলা। রাকিবুলের সঙ্গে বিয়ের পর থেকে তিনি সংসার সামলাচ্ছেন। বড় রাবেয়া খাতুনে বয়স এখন দেড় বছর। জেসমিন বলেন, 'বৈশাখের প্রথম দিনে আল্লাহ সুস্থ বাচ্চা দিয়েছে, এটা অনেক আনন্দের।'

হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. ইকবার কবীর জানান, জন্মের পর রাকিবুলের মেয়ের ওজন ছিল ২ কেজি ৭০০ গ্রাম। শিশুটির মৌলিক কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা, কোনো জটিলতা নেই।

আরও পড়ুন

×