ঢাকা মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি ২০২৫

কুয়াকাটা সৈকতে প্লাস্টিক দূষণ

কুয়াকাটা সৈকতে প্লাস্টিক দূষণ

আড়াই ঘন্টায় ছয় কিলোমিটার সমুদ্র সৈকত থেকে ৩২৩ কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য উদ্ধার করা হয়

হিল্লোল চৌধুরী

প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ১৩:১৫

নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা পটুয়াখালীর কুয়াকাটা। সাগরতীরের এই জনপথ সাগরের অবারিত সৌন্দর্যের কারণে ‘সাগরকন্যা’ নামেও পরিচিত। গবেষণা অনুযায়ী, এখানে রয়েছে বিপন্ন প্রজাতির নানান প্রাণী। আছে সংকটাপন্ন প্রাণীর সমাহার। এছাড়া রয়েছে সমুদ্র সৈকতজুড়ে বিচিত্র প্রজাতির অমেরুদণ্ডী প্রাণীর বাস। দুঃখজনক হলেও সত্য, এই জীববৈচিত্র্যের এক বড় অংশ আজ হারিয়ে যাচ্ছে কুয়াকাটা থেকে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, অসচেতনভাবে পর্যটকদের আনাগোনা আর দূষণে জর্জরিত কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা ধারণ করছে প্লাস্টিক দূষণ।

কুয়াকাটায় প্লাস্টিক দূষণের ভয়াবহতা নিরূপণ এবং মানুষের মনে জনসচেতনতা তৈরিতে পলিথিন ও সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক বন্ধ করার ক্ষেত্রে দক্ষিণাঞ্চলে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ে। পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে দূষণ সৃষ্টিকারী প্লাস্টিক অপসারণ করেছেন শিক্ষার্থীরা। সমুদ্র সৈকতে প্লাস্টিক দূষণের ভয়াবহতা এতটাই বেশি যে, গত ২০ নভেম্বর আড়াই ঘন্টায় ছয় কিলোমিটার সমুদ্র সৈকত থেকে ৩২৩ কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ফুড প্লাস্টিক (র‍্যাপার), পলিথিন, ওয়ান টাইম প্লাস্টিক প্রোডাক্ট, বোতল, সিগারেট প্যাকেট, পরিত্যাক্ত মাছের জাল, পসাধনী পণ্যের বোতল, ই-বর্জ্য অন্যতম। সরকারি এ উদ্যোগে সহোযোগিতা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল এন্ড জিওগ্রাফিকাল ইনফরমেশন সার্ভিসেস, সিইজিআইএস।

ইয়ুথনেট বরিশাল, ও অ্যানিমেল লাভারস অব পটুয়াখালী নামক সেচ্ছাসেবী সংগঠন এ অভিযানে যুক্ত হয়। এতে মোট ৩০ জন অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণকারীরা প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণের সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্র সৈকেতে সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী, পর্যটকদের দূষণ সম্পর্কে সচেতন করেন।

কুয়াকাটার দর্শনীয় স্থানগুলো খুব বেশি মাত্রায় আক্রান্ত প্লাস্টিক দূষণে। বিশেষ করে গঙ্গামতির চর, সমুদ্র সৈকতের জিরো পয়েন্ট, কুয়াকাটা জাতীয় উদ্যানের সম্মুখ দিক। সবচেয়ে বেশি পাওয়া প্লাস্টিকের মধ্যে ছিলো খাদ্য দ্রব্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্লাস্টিক; যেমন– চানাচুর, চিপস, বিস্কুটের প্যাকেট ও পানীয় বোতল।

স্থানীয় লোকজনের মতে, পর্যটকরা অসচেতনতাবসত এসব প্লাস্টিক সৈকতে ফেলে যান। আর দীর্ঘ দিনের অভ্যাসগত কারণে সমুদ্র সৈকত দূষিত হতে থাকে। তবে এত বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিকের উপস্থিতি প্লাস্টিক দূষণের ভয়াবহতার তীব্রতা প্রকাশ করে সমুদ্র সৈকতে। এখনই যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে আরও বেশি ভয়াবহতার মধ্যে পড়বে এখানকার জীববৈচিত্র্য।

এ আয়োজনে নেতৃত্ব দেন পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সহকারী একান্ত সচিব ও পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণবিদ আশিকুর রহমান সমী। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন পটুয়াখালী পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান।

আরও পড়ুন

×