ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ঘনবসতি এলাকায় অবৈধ ইটভাটা

ঘনবসতি এলাকায় অবৈধ ইটভাটা

রৌমারীর দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের কাউনিয়ারচরে অবৈধ ইটভাটা - সমকাল

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৩ | ০৩:৩৪ | আপডেট: ১১ জুন ২০২৩ | ০৩:৩৪

রৌমারীতে ঘনবসতি এলাকায় ফসলি জমিতে এস ব্রিকস নামে ইটভাটা গড়ে উঠেছে। বিষাক্ত ধোঁয়ায় স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছেন এলাকাবাসী। দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের কাউনিয়ারচর (শালুর মোড়) এলাকার ঘটনা এটি। এ নিয়ে গত ১১ মে জেলা প্রশাসক ও জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এ অভিযোগ দেন সালমান কায়সার ইয়াহিয়া নামের এক ব্যক্তি। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রতিকার মেলেনি।

প্রতিকার না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সালমান কায়সার ইয়াহিয়া, সেলিম মিয়া, বাবুল হোসেন, মুকুল মিয়া, মক্কার হোসেন, বাবুল মিয়া, সাদিকুল ইসলাম, এরশাদুল হক, আশরাফুল ইসলাম লাল, আক্তার হোসেন, রাজ্জাক মিয়া, আইয়ুব হোসেন প্রমুখ। তাঁদের অভিযোগ, দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের কাউনিয়ার এস ব্রিকস নামে একটি ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। ভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় পরিবেশের ওপর গুরুতর প্রভাব পড়েছে। দিন দিন মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আশপাশের জমি থেকে মাটি কেটে ইট তৈরি করায় মাটির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে। আগে যেখানে প্রতি একর জমিতে ২০০-৩০০ মণ ধান, ১৫০-২০০ মণ ভুট্টা, ১৬০-১৭০ মণ পাট পাওয়া যেত, এখন সেখানে একই জমিতে উৎপাদন ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ কমে গেছে।

ইটভাটার ধোঁয়া দূষণে ভুগছে চরগয়টাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাউনিয়ারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ, হাফেজিয়া মাদ্রাসা, ছাট কড়াইবাড়ী গ্রাম বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দাঁতভাঙ্গা বিজিবি ক্যাম্প, কাউনিয়ারচর গ্রাম, শালুর মোড় এলাকা, খেতারচর ও ছাটকড়াইবাড়ী এলাকার মানুষ।

শিক্ষার্থীদের দাবি, ভাটায় ইট পোড়ানোর কারণে তাদের বিদ্যালয়ের দিকে কালো ধোঁয়া আসে। এতে তাদের অনেক সমস্যা হয়।

স্থানীয় প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক, সাইফুল ইসলাম, মিজানুর রহমান ও বদিউজ্জামানের ভাষ্য, ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়তে হচ্ছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের। এটি এখন রোধ করতে না পারলে দীর্ঘ সময় ভোগান্তি পোহাতে হবে।

দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম রেজাউল করিম জানান, নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ইটভাটাটি গড়ে তোলায় ফসল ও মানুষ ক্ষতির মুখে পড়েছে। ইটভাটাটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

এস ব্রিকসের মালিক সফিয়ার রহমান বলেন, তিনি নিয়মনীতি মেনে ইটভাটা গড়ে তুলেছেন। পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ইটভাটা চালুর জন্য ছাড়পত্রও নিয়েছেন। তাঁর ভাষ্য, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ অসুস্থ হলে কী করার আছে। ইট যদি না থাকত, তাহলে তালায় তালায় ভবন হতো না। যদি কর্মকর্তারা ইটভাটা বন্ধ করতে বলেন, তাহলে বন্ধ করা হবে।

কৃষি কর্মকর্তা কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘ওই ইটভাটার বিষয়ে আমার কাছে প্রত্যয়নপত্র চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। পরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কৃষিজমিতে ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। এ কারণে প্রত্যয়নপত্র দেওয়া হয়নি।’

জানতে চাইলে জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। সরেজমিন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ ছাড়পত্র দেওয়ার বিষয়ে তিনি জানান, তাঁকে যে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল, তার মেয়াদ শেষ। এর পর ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি।  

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরিফ বলেন, অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন

×