ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

দু'মাস পর যমজের একটি রেখে দেওয়ার দাবি মায়ের

অস্ত্রোপচারে জন্ম

দু'মাস পর যমজের একটি রেখে দেওয়ার দাবি মায়ের

প্রতীকী ছবি

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২০ | ০৫:৩৬ | আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২০ | ০৯:৫৭

সুস্মিতা বেগম সুমী নামে এক গৃহবধূ অভিযোগ করেছেন, অস্ত্রোপচারে তার যমজ সন্তান হয়েছিল। তবে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ একটি সন্তান রেখে দিয়েছে। দুই মাস চার দিন পর গৃহবধূর এমন দাবিতে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।

রাজবাড়ীর প্রাণকেন্দ্র বড়পুলে অবস্থিত রাজবাড়ী ক্লিনিকে গত ১৯ সেপ্টেম্বর ওই গৃহবধূর অস্ত্রোপচার হয়েছিল। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের দাবি, তৃতীয় কোনো পক্ষের ইশারায় ওই গৃহবধূ এমন দাবি করছেন।

সুস্মিতা বেগম রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের কাটাবাড়িয়া গ্রামের অটোচালক মিন্টু শেখের স্ত্রী। তার বাবা আব্দুল আজিজ সরদারের বাড়ি রাজবাড়ী শহরতলির সোনাকান্দর গ্রামে। পেশায় তিনি ভ্যানচালক। সুমীর কাছ থেকে ক্লিনিকের কোনো চার্জ এবং অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

সোমবার রাতে গৃহবধূ সন্তানের দাবিতে স্বজনদের নিয়ে ওই ক্লিনিকে গেলে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাদানুবাদ হয়। এক পর্যায়ে হট্টগোল শুরু হলে সদর থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

গৃহবধূ বলেন, অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর বেশ কয়েকবার আল্ট্রাসনোগ্রাফি করিয়েছি। প্রতিবারই রিপোর্ট এসেছে যমজ সন্তান হবে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাজবাড়ী ক্লিনিকে ভর্তি হই। তিনি দাবি করেন, পরদিন অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে দুটি সন্তান হয়। তখন তার অল্প জ্ঞান ছিল। দুটি সন্তান দেখেছেন। কিছুক্ষণ পর খিঁচুনি উঠে অজ্ঞান হয়ে যান। পরে তাকে ফরিদপুর নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জ্ঞান ফেরার পর একটি সন্তান দেখে স্বজনদের কাছে জানতে চাই আরেকটি কোথায়? তখন তারা জানায়, ক্লিনিক থেকে একটি সন্তান দিয়েছে।

গৃহবধূ জানান, সাত দিন পর সুস্থ হয়ে রাজবাড়ী ক্লিনিকে গিয়ে যমজ সন্তানের কথা বললে তারা তা অস্বীকার করে। ভর্তির সব কাগজপত্র চাইলে তাকে তা দেওয়া হয়নি। পরে বিভিন্ন তারিখ দিয়ে ঘোরাতে থাকে। ডা. শাহনীমা নার্গিস তার অস্ত্রোপচার করেছিলেন বলে জানান তিনি।

গৃহবধূর বাবা আব্দুল আজিজ সরদার বলেন, গত সোমবার সকালে মেয়ে সুমী তার শ্বশুরকে নিয়ে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের গাইনি চিকিৎসক শাহনীমা নার্গিসকে দেখাতে যান। চিকিৎসক তাকে দেখেই চিনতে পেরে জিজ্ঞেস করেন- তোমার যমজ সন্তান কেমন আছে? সুমীর উত্তর ছিল আমার তো একটা সন্তান দিয়েছে। এ সময় সুমী চিকিৎসককে সাক্ষী দেওয়ার কথা বললে তিনি রাজি হন। পরে চিকিৎসক সব অস্বীকার করেন। অভিযোগ দিতে থানায় গেলে তাদের জানানো হয়, অভিযোগ লেখার লোক নেই। তিনি জানান, মামাতো ভাই বক্কারের মাধ্যমে সুমীকে ওই ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয়। তবে বক্কারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি 'ব্যস্ত' বলে কল কেটে দেন।

ডা. শাহনীমা বলেন, দুই মাস পর এমন দাবি সঠিক নয়। এ ছাড়া আমার প্রেসক্রিপশনে তারা অন্য একজনকে দিয়ে লিখিয়েছে 'টুয়াইন বেবি'। আমাদের ডাক্তারি ভাষায় এ শব্দ নেই। আমরা টুয়াইন প্রেগন্যান্সি লিখে থাকি।

সোমবার রাত ৯টার দিকে রাজবাড়ী ক্লিনিকে গিয়ে দেখা যায় মালিক পক্ষের শিশির চক্রবর্তী, ইমানুল করিম জকি, ফকীর শাহাদত হোসেনসহ কয়েকজন একটি কক্ষে বসে আছেন। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে চাইলে ইমানুল করিম জকি বলেন, তৃতীয় কোনো পক্ষের ইন্ধনে গৃহবধূ এই ভিত্তিহীন দাবি করছে।

রাজবাড়ী সদর থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার জানান, প্রেসক্রিপশনে দুই রকম হাতের লেখা দেখা গেছে। আমাদের কাছে অভিযোগটি সত্য বলে মনে হচ্ছে না।

আরও পড়ুন

×