নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৪০ কেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে
জ্বালানি সম্মেলনে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান
জ্বালানি সম্মেলনে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৯:৩৫ | আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৯:৪৪
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, জ্বালানি খাতে আওয়ামী লীগ সরকার দুর্নীতির সুযোগ করে দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ৪০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। শুরুতে ১০টির জন্য দরপত্র ডাকা হচ্ছে। ধাপে ধাপে বাকিগুলোর দরপত্র আহ্বান করা হবে। বুধবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত জ্বালানি সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ জ্বালানি সমৃদ্ধি-২০৫০ শীর্ষক তিন দিনের এই সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিডব্লিউজিইডি)।
তিনি জানান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সমন্বিত মহাপরিকল্পনা নতুন করে তৈরি হবে। এ ছাড়া দেশে সৌরবিদ্যুৎ যন্ত্রপাতি তৈরির কারখানা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আমরা স্বতন্ত্র বিদ্যুৎ উৎপাদকদের (আইপিপি) কাছ থেকেও সরে আসছি এবং আরও টেকসই বিদ্যুৎ নীতিমালা কার্যকরের পথে হাঁটছি।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার জ্বালানিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ম তামিমও বিদ্যুৎ খাতের চুক্তি বাতিল নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, অনেক চুক্তি দীর্ঘমেয়াদি। মেয়াদের আগে বাদ দিতে গেলেই আইনগত ঝামেলা আছে। আর্থিক জরিমানা তো আছেই। একটি প্রকল্প বন্ধ করতে গেলে ৮ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার জরিমানা দিতে হবে।
ম. তামিম বলেন, সার্বক্ষণিক চলছে এখন সাত হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র। ছয় হাজার মেগাওয়াটের মতো বড় কেন্দ্র বসিয়ে রেখে কেন্দ্রভাড়া দিতে হচ্ছে। এটা কি বাদ দেওয়া যাবে? গরমের সময় তো এগুলো লাগবে। সত্যিকার পরিকল্পনা করে এ খাত এগোয়নি। তাই রূপান্তরের ক্ষেত্রে সতর্কতার সঙ্গে পরিকল্পনা করে এগোতে হবে।
তারা ক্লাইমেট ফাউন্ডেশনের ডেপুটি রিজিওনাল প্রোগ্রাম ডিরেক্টর সাইনান হাউটন বলেন, ভিয়েতনাম, দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান ও চীনের মতো দেশগুলো চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতেও নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে অসাধারণ অগ্রগতি অর্জন করেছে। তাদের জ্বালানি রূপান্তর বাস্তবায়নে বছর নয়, মাত্র কয়েক মাস লেগেছে। বাংলাদেশেও সম্মিলিত প্রচেষ্টাও প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে বড় কিছু করা সম্ভব।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য সুন্দরবনের ক্ষতি হচ্ছে। এ কেন্দ্রের সঙ্গে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি বিদ্যুৎ ক্রয়চুক্তি আছে। তাহলে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাঁচতে ২০ বছর অপেক্ষা করতে হবে কিনা? পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ৪ হাজার ২০০ পরিবার উচ্ছেদ করা হয়েছে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে। বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল হয়েছে। পরিবারগুলোকে জমি ফিরিয়ে দেওয়া যায় কিনা, তা জানতে চান একজন।
সম্মেলনের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন বিডব্লিউজিইডির সদস্যসচিব হাসান মেহেদী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কোস্টাল লাইভলিহুড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল অ্যাকশন নেটওয়ার্কের ক্যাপাসিটি বিল্ডিং উপদেষ্টা বেনজীর আহমেদ ও ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যাপক ফাহমিদা হক। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, তিনশ’র বেশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। সম্মেলনটি শুক্রবার পর্যন্ত চলবে।
- বিষয় :
- বিদ্যুৎ
- বিদ্যুৎ উৎপাদন
- নবায়নযোগ্য জ্বালানি