ঢাকা মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

ওজন স্লিপ নিয়ে বন্দর-কাস্টমস দ্বন্দ্ব

বেনাপোল বন্দরে আটকে পণ্যের শতাধিক চালান

বেনাপোল বন্দরে আটকে পণ্যের শতাধিক চালান

যশোর অফিস

প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২৩ | ১৭:০৩ | আপডেট: ১৫ আগস্ট ২০২৩ | ১৭:০৩

পণ্য আমদানিতে ওয়েব্রিজের ওজন স্লিপ নিয়ে বেনাপোল কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। এর জেরে গত ১০ দিন ধরে বেনাপোল কাস্টমস পরীক্ষণ (আইআরএম) বিভাগ আমদানিকৃত পণ্যের পরীক্ষণ রিপোর্ট দিচ্ছে না। এতে বেনাপোল বন্দরে আটকে পড়েছে আমদানি পণ্যের শতাধিক চালান।

কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, চালান বন্দরে ঢোকার আগে ওজন স্কেলে ট্রাকসহ পণ্যের গড় ওজন নিশ্চিত করা হয়। পণ্য খালাসের পর আবার খালি ট্রাক ওজন করে পণ্যের নিট ওজন নিশ্চিত হয়ে ওজন স্লিপ দেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে গত কয়েক মাসে বেনাপোলের কয়েকটি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ভুয়া ওজন স্লিপ সংযুক্ত করে পণ্য খালাস করে নিয়েছে। স্লিপে পণ্যের প্রকৃত ওজন কমানোয় সরকার বিপুল অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তাই গত ৭ আগস্ট ১১টি পণ্য চালানের ওজন নিশ্চিত হওয়ার জন্য বেনাপোল কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার তানভীর আহম্মেদ বন্দর পরিচালক বরাবর চিঠি দেন। কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষ স্লিপ কারসাজির সত্যতা যাচাই না করে কাস্টমস কমিশনার বরাবর পাল্টা চিঠি পাঠায়। বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) আব্দুল জলিল স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, স্থলবন্দরের ওয়েব্রিজ নম্বর ৪ ও ৫-এ কাস্টম হাউস ও বন্দরের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তার উপস্থিতিতে ওজন কার্যক্রম সম্পাদন করা হয়। ওয়েব্রিজ স্কেলে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তার সশরীরে উপস্থিত থেকে সব ট্রাকের ওজন স্লিপে স্বাক্ষর দেওয়া প্রয়োজন।

সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ীরা জানান, সমস্যার সমাধান না করে কাস্টমস ও বন্দরের মধ্যে চিঠি চালাচালির কারণে আমাদের পণ্যের চালান বন্দরে আটকে আছে প্রায় ১০ দিন। ফলে আমদানিকারকদের বন্দরের ভাড়া গুনতে হচ্ছে। বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ বলেন, কাস্টমস ও বন্দরের মধ্যে ওয়েব্রিজের ওজন নিয়ে জটিলতার কারণে ব্যবসায়ীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। গত ১০ দিন ধরে আইআরএম তাদের পরীক্ষণ চালালেও রিপোর্ট না হওয়ার কারণে পণ্যের শুল্কায়ন হচ্ছে না। যে কারণে বন্দর থেকে খালাস প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে। তবে বন্দর ও কাস্টমস কর্মকর্তার উপস্থিতিতে ওয়েব্রিজের ওজন নিশ্চিতসহ স্লিপে উভয়েই স্বাক্ষর করলে এ সমস্যার সমাধান হবে বলে আমি মনে করি।

এ বিষয়ে বেনাপোল কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার শাফায়েত হোসেন বলেন, ওজন স্লিপ নিয়ে যে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে তা সমাধানের জন্য আমরা দ্বিতীয় দফায় বন্দর কর্তৃপক্ষকে আরেকটি চিঠি দিয়েছি। আমরা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোনো ভূমিকা রাখছে না।

অভিযোগ প্রসঙ্গে বেনাপোল বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) আব্দুল জলিল বলেন, ওজন কার্যক্রম সম্পাদনের পর স্লিপে কাস্টমস প্রতিনিধি স্বাক্ষর করেন না। ওয়েব্রিজ স্কেলে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা উপস্থিত থেকে ট্রাকের ওজন স্লিপে স্বাক্ষর করলে এর সঠিকতা যাচাই করা হয়ে যায়। কাস্টমস এ কাজটি না করে সব দায় আমাদের ওপর চাপিয়ে দিতে চায়। পণ্য পরীক্ষণের সময় তো কাস্টমস কর্মকর্তারা ডিজিটাল স্কেলে ওজন নিশ্চিত করেন। তাহলে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা উপস্থিত থেকে স্লিপে স্বাক্ষর করলে সমস্যা কোথায় আমি জানি না। এরপরও আমরা কাস্টমসের সঙ্গে সমন্বয় করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।

আরও পড়ুন

×